(গুপ্তধন উদ্ধার এবং যুদ্ধের সরঞ্জাম তৈরি)

بسم الله الرحمن الرحيم

আস্সালামু আলাইকুম।

মোহাম্মাদ কাসীম বলেন, ৯ ফেব্রুয়ারী ২০১৮ তারিখের স্বপ্নে, আমি একটি জায়গা অতিক্রম করছিলাম, আমার পথে আমি জমির দিকে তাকালাম সাথে উপরে কিছু ঘাস গজানো ছিলআমি অনুভব করেছিলাম যে, এই জমিতে স্বর্ণ, হীরা এবং অন্যান্য মূল্যবান ধাতু উপস্থিত। যখন আমি পৃথিবী খুঁড়লাম আমি একটি বস্তুর মত পাথর পেলাম। যখন আমি এটি হতে ময়লা পরিস্কার করলাম তখন আমি খুঁজে পেলাম এটি একটি স্বর্ণ। আমি খুবই খুশি হলাম এবং পৃথিবী খোঁড়া অব্যাহত রাখলাম এবং স্বর্ণ, হীরা এবং অন্যান্য মূল্যবান ধাতু খুঁজে পেলাম। আমি খুবই খুশি হলাম এবং বললাম যে, আমি একটি যন্ত্র তৈরি করব যেটা আমি আল্লাহর সাহায্যে স্বপ্নে দেখেছিলাম। আমি সবকিছু একটি থলেতে রাখলাম এবং এটি তুলে নিয়ে সামনের দিকে চললাম। এখন আমি একটি জায়গা খুঁজতে শুরু করলাম যেখানে আমি এই স্বর্ণগুলো এবং অন্যান্য ধাতুগুলো গলাতে পারি এবং যন্ত্রটি তৈরি করতে পারি। আমি চলা অব্যাহত রাখি এবং তারপর আমি আমার ডানে একটি ভবন দেখতে পাই। আমি বললাম, আমি সেখানে কিছু লোহার চুল্লি খুঁজে পেতে পারি, যেখান থেকে আমি যন্ত্রটি তৈরি করতে সক্ষম হতে পারি। যখন আমি ভবনের ভিতরে প্রবেশ করলাম তখন আমি অনুভব করলাম যে, এটি কিছু শয়তানী শক্তির দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। আমি এই চিন্তা করে ভীত হয়েছিলাম এবং বললাম, যদি কোন একজন আমাকে দেখে ফেলে, তারা আমাকে ধরে ফেলবে। কিন্তু আমার ভবনের ভিতরে যেতেই হবে এবং আর অন্য কোন বিকল্প নেই। আমি বললাম, যখন হযরত মোহাম্মাদ () মক্কায় প্রচরণ করেছিলেন, অবিশ্বাসীরা এলাকা অবরোধ করেছিল কিন্তু তিনি কুরআন থেকে কিছু আয়াত তেলাওয়াত করেছিলেন, এর কারণে অবিশ্বাসীরা তাঁকে দেখতে পায়নি। অতএব, আমারও একি কাজ করা উচিত। আমি মনে করার চেষ্টা করলাম কিন্তু শব্দগুলো স্মরণ করতে পারলাম না যেগুলো          মোহাম্মাদ () তেলাওয়াত করেছিলেন (৩৬:)ভবনের আলো ছিল খুবই কম। যার কারণে দৃষ্টিপাত ছিল কয়েক পা পর্যন্ত। আমি আল্লাহর নাম ঘোষণা করলাম এবং সামনের দিকে যাওয়া শুরু করলাম। যখন সূরা ইখলাস তেলাওয়াত করছিলাম, শয়তানী শক্তি আমাকে দেখতে পায়নি। ভবনের মধ্যে আমি সোজা পথে যাচ্ছিলাম, যেটা অনেক দীর্ঘ ছিল এবং আমি অনেক বেশি ওজনও বহন করছিলাম। আমি ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিলাম কিন্তু আমি ছেড়ে দেইনি এবং অনবরত চলা অব্যাহত রেখেছিলাম। এটি খুব বড় ভবন এবং ভিতর থেকে অনেক গভীর। আমি অনবরত ভয়ের ছাপ নিয়েছিলাম যে শয়তানী শক্তি সেখানে উপস্থিত ছিলএকটা নির্দিষ্ট বিন্দুতে পৌঁছানোর পরে আমি অনুভব করলাম যে, আমি শয়তানী শক্তির সীমার বাইরে বেড়িয়ে গিয়েছি। আমি খুবই ক্লান্ত হয়েছিলাম এবং আমি আমার বাঁদিকে একটি জায়গা দেখতে পাই। যখন আমি সেখানে গেলাম তখন আমি একটি লোহার চুল্লী, কিছু মাপনদন্ড এবং একটি লোহার টেবিল দেখতে পেলাম। এখানে সমস্ত উপকরণ যেগুলো আমি চাচ্ছিলাম তা উপস্থিত ছিল আমি বললাম, হ্যাঁ, এই হয় যা আমি খুঁজছিলাম। আমি আমার জিনিসপত্র সেখানে জায়গামত রাখলাম এবং কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেওয়ার পরে আমি লোহার চুল্লীটি দেখা শুরু করলাম। আমি অন্ধকারের কারণে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হলাম। যখন আমি লোহার চুল্লীর দিকে তাকালাম তখন আমি দেখলাম এর মধ্যে আগুন জ্বলছে না। এটা মনে হচ্ছিল যে লোহার চুল্লীটি অনেক বছর ধরে ব্যবহার হয়নি। কয়লাগুলোও সেখানে উপস্থিত ছিলহঠাৎ আমি বুঝতে পারলাম যে, সেখানে কয়লায় আগুন জ্বালানোর মত কিছুই নাই। আমি বললাম, যদি আমি আগে এটি জানতাম তাহলে আমি অন্তত একটি দিয়াশলাই কাঠি নিয়ে আসতে পারতাম। আমি খুবই ক্লান্ত হয়েছিলাম এবং বললাম, এটি খুবই কঠিন কাজ। আমি ভেবেছিলাম যে এটি সহজ হবে। আমি অন্ধকারে আগুনের আলো জ্বালানোর জন্য কিছু খুঁজছিলাম। অবশেষে, আমি কিছু তেল আর পাথর পেলাম। কয়লার মধ্যে তেল ঢাললাম এবং পাথরে ঘর্ষণ তৈরি শুরু করলাম যাতে কোন ভাবে তারা আগুন ধরতে পারে কিন্তু তারা পারলনা। আমার হাতগুলো ক্লান্ত হয়েই ছিল সব ভারী জিনিস বহনের কারণে। এসব কিছুর মধ্যেই আমার বাঁহাতের পাথরটি পড়ে যায়। আমি খুব রেগে উঠি এবং বলি যে, আমি কোন ভাবেই এই কাজটি আর করতে পারবনা। আমি খুবই ক্লান্ত এবং এখনো অনেক কাজ বাকী আছে। এখনকার জন্য আমি আগুনও জ্বালাতে পারবনা এবং যদি আমি করি, স্বর্ণ এবং ধাতু গলানো এবং যন্ত্রটি তৈরি করা কঠিন কাজ। আমার হতাশার মধ্যেই আমি আমার দ্বিতীয় পাথরটিও কয়লায় নিক্ষেপ করি। এটি প্রথম পাথরটিকে আঘাত করে যেটি একটি বড় ফুলকি তৈরি করেছিল এবং কয়লাগুলো আগুন ধরে ফেলে। কিন্তু আমি তখনও বলছিলাম, আমি আর এই কাজ করতে চাইনা। আমি যা পেরেছিলাম তা সব করেছিলাম। তারপর আমি হতাশা নিয়ে ফেরার পথে একনজর তাকালাম এবং বললাম, আমি আশা করি, আমি যদি এই কাজটি শুরু না করতাম, এখন কীভাবে আমি এতদূর পথ ফিরে যাব, যেটা বিপদজনকও? তারপর আমি অন্যদিকে তাকালাম এবং বললাম, আমার সামনে এগিয়ে যাওয়া এবং পরীক্ষা করে দেখা উচিত, সম্ভবত সেখানে কিছু পথ থাকতে পারে এখান থেকে বের হওয়ার জন্য। আমি শুধু দুই ধাপ নিয়েছি, আমি কিছু লোকের পদধ্বনি শুনতে পেলাম আমার চারপাশে হাঁটছে। যখন আমি আমার ডানদিকে তাকালাম আমি কিছু লোক দেখতে পেলাম। আমি তাদেরকে দেখার পরে থামলাম এবং বললাম, কারা ঐ লোকগুলো? যখন আমি গভীরভাবে তাকালাম তখন দেখলাম তারা কালো পোশাক পড়েছিল এবং মাথায় পাগড়ি ছিল তারা লোহার চুল্লীর কাছে থামল এবং স্বর্ণ ও হীরা থলে থেকে নিল এবং তা একদিকে রাখলতারপর তারা চুল্লীর আগুন বাড়াল এবং স্বর্ণগুলো গলাতে শুরু করলআমি অবাক হলাম এবং জিজ্ঞেস করলাম, তারা কি করছে, এগুলো আমার জিনিস। তারপর আমি বললাম, কেন আমি লক্ষ্য করছি? আমি এই কাজ করতে যাচ্ছিনা। আমি অন্ধকারের কারণে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছিলামনা। ঐ লোকগুলো গলিত স্বর্ণ থেকে কিছু তৈরি করছিলএকজন লোক স্বর্ণ থেকে তৈরি করা দুইটি জিনিস টেবিলের উপর রাখল এবং তারপর আবার কাজ শুরু করল স্বর্ণটি অন্ধকারে খুবই উজ্জ্বলিত ছিল আমি বললাম, এই লোকগুলো কি তৈরি করল? যখন আমি নিকটে গেলাম তখন দুটি স্বর্ণের সরঞ্জাম খুঁজে পেলাম যার উপরতলে হীরা খঁচিত ছিল সেগুলো দেখার পরে আমি খুবই অবাক এবং খুশি হয়েছিলাম এবং বললাম এগুলো একদম সেই সরঞ্জামের মত যেগুলো আমি তৈরি করতে চাচ্ছিলাম। যখন আমি খুব সতর্কভাবে পরীক্ষা করলাম, আমি সেগুলো খুব সুন্দরভাবে তৈরি পেলাম কিন্তু তখনও সেখানে কিছু ঘর ছিল উন্নত করার জন্য। প্রথমত, আমি ভাবছিলাম যে, আমার লোকগুলোকে বলা উচিত সরঞ্জামগুলোর উন্নতির জন্য। কিন্তু আমি থামলাম এবং বললাম, এই অন্ধকারে যা তৈরি হয়েছে তাই যথেষ্ট। আমি তাদেরকে বিরক্ত করবনা। আল্লাহ্‌ আমার কাজ সহজ করে দিয়েছেন। একবার তারা সব যন্ত্রাংশ তৈরি করলে আমি যন্ত্রটি তৈরি করব। যখন আমি সরঞ্জামাদির দিকে তাকাচ্ছিলাম তখন আমি কারো পদধ্বনি শুনতে পাই। আমি তাকানোর জন্য ঘুড়ে দেখি এবং দেখি মোহাম্মাদ () আমার দিকে আসছেন। আমি তাকে দেখে খুব খুশি হই। মোহাম্মাদ () এর চলার ধরন দেখে আমি বুঝতে পারলাম যে, তিনি খুবই দূর্বল এবং এটা আমাকে দুঃখিত করলআমি তাকে শুভেচ্ছা জানালাম এবং তিনিও আমাকে। আমি বললাম দেখুন, এই লোকগুলো এইসব সরঞ্জামাদি তৈরি করেছে যেটা একটা কঠিন কাজ। কীভাবে এগুলো উজ্জ্বলিত হচ্ছে এবং এর মধ্যে হীরাগুলোও জ্বলছে। মোহাম্মাদ () এগুলো দেখে খুবই খুশি হলেন এবং বললেন, এই লোকগুলো খুবই কঠিন কাজ করছে এবং ভাল কাজ করছে। আল্লাহ্‌ (সুবহানাহু ওয়া তায়ালা) তাদেরকে বড় পুরস্কার দিবেন। তারপর আমি বললাম, আপনি কি এগুলো ধরতে পারবেন এবং গুণাগুণ যাচাই করবেন? মোহাম্মাদ () বললেন, আমি খুবই দূর্বল হয়ে গিয়েছি এবং আমার ডান বাহুর পেশিও খুবই দূর্বল। এই সরঞ্জামাদি খুবই ভারী এবং আমি এগুলো তুলতে পারবনা। আমি বললাম, দুশ্চিন্তা করবেন না, শিঘ্রই যখন সবগুলো যন্ত্রাংশ তৈরি হয়ে যাবে, আমি একটি যন্ত্র তৈরি করব যেটা আপনার বাহু ঠিক করে দিতে সক্ষম হবে। আপনার বাহু আবারও স্বাভাবিক হবে এবং আপনি আপনার শরীরেও শক্তি পাবেন এবং আপনি কাজও করতে পারবেন যেভাবে কাজ করতে আপনি পূর্বে অভ্যস্ত ছিলেন। এটি শোনার পর মোহাম্মাদ () খুবই খুশি হয়েছিলেন এবং উত্তেজনায় বলেছিলেন, কাসীম, আল্লাহ্আপনাকে আরও জ্ঞান দান করুন। স্বপ্ন এখানেই শেষ হয়।

জাযাকাল্লাহু খাইরান।

Scroll to Top