(আব্দুর রহমান কিভাবে দাজ্জাল হল)
بسم الله الرحمن الرحيم
আস্‘সালামু আলাইকুম।
ইমাম মাহদী
মোহাম্মাদ কাসীম বলেন, যখন আমার বয়স ১৩ বছর ছিল এবং প্রথম বার আল্লাহ্ এবং আল্লাহর
রসূল (সঃ)কে স্বপ্নে দেখেছি তখন থেকেই আমি অন্য একজন ব্যক্তিকে স্বপ্নে দেখে আসতেছি।
আমার প্রথম স্বপ্নে আল্লাহ্ তাকে আব্দুর রহমান নাম বলে ডাকে। সে অনেক ভাল, ধার্মিক এবং পরহেজগার মানুষ ছিল। আল্লাহ্
আমাকে আব্দুর রহমানের উদাহরণ দিত যে, কাসীম, তুমিও নিজেকে তার মত নেক এবং সত্যিকারের মুসলমান বানাও। কিন্তু ২০১৫ সালে
প্রথম বার আল্লাহ্ তাকে দাজ্জাল বলে ডেকেছে। এসব কিভাবে হল? সে একজন নেক ও পরহেজগার মুসলমান থেকে কিভাবে দাজ্জাল হল আসুন জেনে নিই,
কাসীম বলেন, শুরুতে আমি আমার স্বপ্নে দেখি
যে, কোন কাজের জন্য আল্লাহ্ ২ জন বান্দাকে নির্বাচিত করেন।
আমাকে নির্বাচিত করেন রসুল্লাল্লাহ মোহাম্মাদ (সঃ) এবং তাকে মানে আব্দুর রহমানকে কে
নির্বাচিত করেছে তা এখনো আমি জানতে পারিনি। ঐ ব্যক্তি আব্দুর রহমান অনেক ধনী ছিল এবং
আরব দেশের কোন এক আলিশান পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিল, অন্যদিকে
আমি পাকিস্তানে জন্মগ্রহণ করি এবং গরীব ছিলাম। আল্লাহর কোন বড় কাজ করাতে হবে এবং এর
জন্য আমাদের ২ জনের মধ্য থেকে কোন ১ জনকে নির্বাচিত করতে হবে। আল্লাহ্ আমাকে বলেন,
তুমি নিজে নিজেকে ঠিক কর। তারমানে ঠিক তেমন যেমন আল্লাহ্ চান কোন
মোসলমান ব্যক্তি হবে। তারপর আল্লাহ্ আমাকে এক ব্যক্তির মানে আব্দুর রহমানের উদাহরণ
দেওয়া শুরু করে যে, কাসীম ঐ ব্যক্তি এমনই যেমন আমি চাই। তারপর
আল্লাহ্ আমাকে এমনকি দেখান যে, ঐ ব্যক্তি মানে আব্দুর রহমান
অনেক ভাল, ধার্মিক এবং পরহেজগার ছিল। তার উত্তম চরিত্র এবং
নম্রতার সাথে সে লোকদের সাথে আচরন করে। আল্লাহ্ আমাকে বলেন, কাসীম, সত্যিকারের মুসলিম এমনই হয়। আমি বলি,
সে ত বহুতই নেক এবং পরহেজগার মানুষ। আমি ত এমন হতে পারব না। আমাদের
মধ্যে ৩টি পরিক্ষা হবে যে যত বেশি নাম্বার পাবে সেই ঐ কাজের জন্য নির্বাচিত হবে যেই
বড় কাজটা আল্লাহ্ করাবেন এবং যে আমাদের মধ্যে বিজয়ী হবে আল্লাহ্ তাকে তার ইচ্ছামত ৫টি
শক্তি বা ৫টি ক্ষমতা দান করবেন। এটা এই জন্য যে, যেই কাজ তাকে
করতে হবে তা করার জন্য ঐ শক্তি তাকে সাহায্য করবে। আমাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা হয়। প্রথম
পরিক্ষায় আমি বিজয়ী হই। আমি ৫ নাম্বার পাই এবং সে ৪ নাম্বার পায় কিন্তু দ্বিতীয় পরিক্ষায়
আমি যোগ দিতেই পারিনি এবং অনুপস্থিত থাকি। আমার অনুপস্থিতির কারণে তৃতীয় পরিক্ষায় আমরা
পৌছাইই না এবং সে বিজয়ী হয়ে যায় এবং ঐ কাজের জন্য নির্বাচিত হয়ে যায়। যেই কাজটা আল্লাহ্
করাবেন। এখানে একজন ব্যক্তি যে এসব দেখতেছিল সে আমাকে বলে, কাসীম, তুমি ব্যর্থ হয়েছ, তোমাকে আল্লাহ্ প্রত্যাখ্যান করে দিয়েছে, এখন তুমি
দুনিয়া এবং আখিরাতের জীবন কিভাবে পার করবে? আমি তাকে বলি আল্লাহর
রহমত থেকে আশা হারাবে না, আল্লাহর রহমত থেকে ত শুধু কাফিরাই
আশা হারায়। তারপর আমি সামনে যাই এবং খুবই সুন্দর একটা জায়গায় পৌছাই। আমি দেখি যে,
ঐ ব্যক্তি আব্দুর রহমান এবং তার এক সাথী ঐখানে বসে থাকে কারণ সে বিজয়ী
হয়ে গিয়েছিল এবং ঐ কাজের জন্য নির্বাচিত হয়ে গিয়েছিল। যে কাজটা আল্লাহ্ করাবেন এবং
নিয়ম অনুযায়ী এখন তার ইচ্ছামত ৫টি ক্ষমতাও সে পাবে। মানে হচ্ছে সে যে কোন ৫টি ক্ষমতা
আল্লাহর কাছে চাইতে পারবে এবং আল্লাহ্ তাকে তা অবশ্যই দিবেন। তাকে দেখে আমার মনে একটি
শয়তানি চিন্তা আসে আমি বলি কাসীম ২ জন ব্যক্তিই নির্বাচিত হয়েছিল ঐ কাজের জন্য যেই
কাজটা আল্লাহর নিতে হবে বা করাবেন। যদি আমি এই ব্যক্তিকে হত্যা করে ফেলি তাহলে ঐ কাজের
জন্য শুধু আমিই অবশিষ্ট থাকব যেই কাজটা আল্লাহকে করাতে হবে কিন্তু তারপর আমি বলি,
না, এটা ভুল কাজ। আমাকে আমার অন্তর বড় রাখা
উচিত এবং কারো বিরুদ্ধে ক্ষোভ ও বিদ্বেষ রাখা উচিত নয়, এমনকি
যদি এটা সে ই হয়। আমি তার কাছে যাই এবং তাকে মোবারকবাদ দেই। আমি তার নাম নিয়ে বলি,
আব্দুর রহমান তোমাকে মোবারক। আল্লাহ্ তার দয়ার দ্বারা সফলতা দিয়েছেন
এবং ঐ কাজের জন্য নির্বাচিত করেছেন। তারপর এখানে আমি তাকে আমার সেই অসহায়ত্ব বলে দেই,
যার কারণে আমি দ্বিতীয় পরিক্ষায় অংশগ্রহনই করতে পারিনি। সে এটা শুনে
আমার অসহায়ত্বের ঠাট্টা করে এবং তারা ২ জন আমার উপর হাসা শুরু করে এবং হাসতেই থাকে।
আল্লাহ্ এসব দেখতেছিলেন। তার এই আচরণের কারণে আল্লাহ্ অনেক রাগান্বিত হন। আল্লাহ্ তার
আরশ থেকে অনেক দ্রুত আমাদের দিকে আসেন। আল্লাহ্ বলেন, কাসীম
তুমিও মুসলিম এবং সেও মুসলিম। মুসলিম হওয়ার পর ত এটা হওয়া উচিত ছিল যে, সে তোমাকে সাহায্য করবে। কিন্তু তার পরিবর্তে সে তোমার অসহায়ত্বকে উপহাস
করেছে এবং তোমার উপর হাসা শুরু করে দিয়েছে। কাসীম, এখন আমি
তোমাকে দেখাব যারা কাউকে নিয়ে ঠাট্টা উপহাস করে আমি তাদের কি বিচার করি। আল্লাহ্ ঐ
কাজ থেকে যেই কাজের জন্য তাকে নির্বাচন করা হয়েছিল তাকে অপমানজনক ভাবে সরিয়ে দেন এমনকি
ঐ ভাবেই যেভাবে শয়তান আদম (আঃ)কে হিংসা এবং অহংকারের কারণে সিজদা করেনি এবং সে প্রত্যাখ্যাত
হয়েছিল। এভাবেই কাউকে নিয়ে মজা করা উপহাস করাও অহংকার এবং হিংসার একটি রুপ হয়। এবং
একজন মানুষ অন্য একজন মানুষকে নিজের থেকে নিকৃষ্ট বা কম দামী মনে করে। এবং শয়তানও আদম
(আঃ)কে নিকৃষ্ট মনে করেছিল, এই কারণে তাকে সিজদা করেনি। এখানেও
সে আমাকে তার থেকে নিকৃষ্ট বা কম দামী মনে করে আমাকে উপহাস করেছে এবং আল্লাহ্ তাকে
ঐ কাজ থেকে সরিয়ে দাজ্জাল বানিয়ে দিয়েছেন। তারপর আল্লাহ্ আমাকে বলেন, কাসীম তাকে দিয়ে আমি যেই কাজটি করাতাম এখন ঐ কাজটি আমি তোমাকে দিয়ে করাব।
যেহেতু সে বিজয়ী হয়েছিল এই কারণে আমি তাকে তার ইচ্ছামত ৫টি ক্ষমতা দিব এবং ঐ ক্ষমতাগুলো
ব্যবহার করার জন্য আমি তাকে সুযোগও দিব। আমি বলি, ইয়া আল্লাহ্
যদি তুমি তাকে তার ইচ্ছামত ৫টি শক্তি দান কর তাহলে ত সে অনেক শক্তিশালী হয়ে যাবে এবং
আমি কিভাবে তার সাথে মোকাবেলা করব? তখন আল্লাহ্ বলেন,
কাসীম তার সাথে যুদ্ধ করার জন্য আমি তোমাকে আমার নূর দিব। স্বপ্ন
শেষ হয়।
জাযাকাল্লাহু খাইরান।