(দাজ্জাল এর আগমন এবং চূড়ান্ত ঈমানী পরীক্ষা)
بسم الله الرحمن
الرحيم
আস্‘সালামু আলাইকুম।
মোহাম্মাদ কাসীম বলেন, আমি দাজ্জালকে আমার স্বপ্নে অনেক বার দেখেছি।
দাজ্জালের উচ্চতা ৬ ফুট ১ বা ২ ইঞ্চি। সামান্য কোঁকড়ানো চুল, সামান্য কালো রঙের
চামড়া। দাজ্জালের মুখ ছিল নিষ্ঠুর এবং যখন সে হাঁটে তখন মনে হয় যে, তার সামনে কেউ
দাড়াতে পারবেনা। আমার কাছে তাকে একটি সাধারণ মানুষই মনে হয়। কিন্তু তার আছে
অনেক জাদুবিদ্যার শক্তি। এক স্বপ্নে শয়তান তাকে ডাকে, তার ধনী সেনাপতি হিসেবে।
যখন আল্লাহ্ সমগ্র পৃথিবীকে তার নূর দিয়ে পূর্ণ করে দিলেন তার করুণা দ্বারা।
তারপর এটা কিছু সময়ের জন্য শান্তিতে পরিপূর্ণ হয়ে ছিল এবং কয়েক বছর পর হঠাৎ
দাজ্জাল আবির্ভূত হয়। যখন দাজ্জাল হাজির হয় তখন লোকজন চিন্তিত হয়ে পরে। দাজ্জাল
নিজেকে প্রভু দাবি করে এবং তার ক্ষমতাও তার এই দাবিকে সমর্থন করে। দাজ্জাল চেষ্টা
করে লোকজনকে অনন্ত যৌবন এবং জীবনের প্রলোভন দেখিয়ে এবং দুর্বল ঈমানের লোকজন খুব
দ্রুত তাকে অনুসরণ করা শুরু করে। আমি দাজ্জালকে থামাতে গিয়েছিলাম এবং সে বলল যে, “কাসীম, আমার সাথে যোগদান কর। আমি অবশ্যই তোমাকে অনন্ত যৌবন
এবং জীবন দিব।” তাই আমি দাজ্জালকে জিজ্ঞাসা করি যে, “এইসব দিয়ে কী হবে? একদিন আমরা সবাই মরে যাব এবং তুমি কখনোই তোমার উদ্দেশ্যে সফল হতে পারবেনা
এবং একদিন তোমাকেও মরতে হবে। আমার এবং তোমার প্রভু হচ্ছেন, এক আল্লাহ্। তিনিই
সমগ্র বিশ্বের প্রভু।” এইসব শুনে দাজ্জাল বিরক্ত হয়ে উঠে এবং তার চেহারাটিকে
অত্যন্ত ভয়ঙ্কর একটি রূপে রূপান্তরিত করে। এবং আমার দেহ কাঁপতে শুরু
করে এবং আমি আর কিছু বলার সাহস পাইনি। এবং দাজ্জাল আমাকে বলল যে, “কাসীম, যদি তুমি আমার সাথে যোগদান না কর, তাহলে আমি তোমাকে
হত্যা করব। অতএব বাড়িতে যাও এবং সাবধানভাবে চিন্তা
কর, তুমি কোন পথ বেছে নিতে চাও?” তারপর আমি বাড়িতে
মুসলমানদের কাছে আসি এবং বলি যে, “কেউ যদি দাজ্জালের কাছে যায় তাহলে
তার ৯৯.৯% সুযোগ রয়েছে যে, সে তার সাথে যোগ দেবে। দাজ্জাল একটি মহাপরীক্ষা। এবং
শুধুমাত্র তারাই এই পরীক্ষা থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করতে পারবে, যাদের উপর আল্লাহর
বিশেষ করুণা হয়। এবং ও মুসলমানেরা, দাজ্জালের সাথে যোগদানের পরিবর্তে এটাই উত্তম
যে, আমরা মুসলমান হিসেবে মারা যাই। আসুন আমরা দাজ্জালের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে করতে
আল্লাহর পথে মরতে থাকি।” সকল মুসলমানরা আমার সাথে একমত হল। তারপর আমরা দাজ্জালের
বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করি। মুসলমান সেনাবাহিনীরা দাজ্জালের সেনাবাহিনীদের
বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এবং আমি দাজ্জালের সাথে যুদ্ধ করি
এবং তাকে ব্যস্ত করা হয়েছে। তাই সে মুসলমান সেনাবাহিনীর উপর তার
ক্ষমতা ব্যবহার করতে সক্ষম হবেনা। যাতে করে মুসলমান সেনাবাহিনীরা দাজ্জাল সেনাবাহিনীকে
যতটা সম্ভব ধ্বংস করতে পারে। আল্লাহর নূর আমার ডান হাতের শাহাদাত আঙ্গুলে হাজির হয়। আমি
আল্লাহর নূর দ্বারা দাজ্জালের সাথে দীর্ঘ সময় ধরে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছি, কিন্তু
দাজ্জাল অত্যন্ত ক্ষমতাশালী ছিল। এবং তার সাথে যুদ্ধ করার সময় হঠাৎ আল্লাহর নূর
আমার শাহাদাত আঙ্গুল থেকে অদৃশ্য হয়ে গেল। এবং আমি বললাম যে, কাসীম এখান থেকে
পালিয়ে যাও। এবং দাজ্জাল আমার পিছনে আসছে এবং বলল যে, কাসীম, আমি আজ তোমাকে জীবিত
যেতে দিব না। এবং আমি আল্লাহর করুণা দ্বারা বাতাসে দৌড়াতে শুরু করি এবং আমি দৌড়াতে
থাকি, আমি একটি পাহাড়ী এলাকায় পৌঁছা পর্যন্ত। এবং দাজ্জালও
সেখানে আমার পরে এসেছিল। দাজ্জাল আমাকে পেছন থেকে আক্রমণ করে এবং আমি সেখানে আহত
হয়ে পড়েছিলাম। সেখানে একটি বড় পাথর পরে ছিল এবং এটি খুলে গেল এবং বলল যে, “কাসীম, আমার ভিতরে নিজেকে লুকিয়ে ফেল। আমি তোমাকে দাজ্জাল
থেকে রক্ষা করব।” কিন্তু আমি প্রত্যাখ্যান করেছিলাম। এবং সেই সাথে
দাজ্জাল আমার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করল এবং বলল যে, কাসীম, মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত
হও। সে আমাকে মেরে ফেলছিল, কিন্তু সেই মুহূর্তে আমি আল্লাহ্কে ডাকি যে, “ও আল্লাহ্, আমাকে সাহায্য কর।” এবং তারপর আকাশ
থেকে লিখিত আল্লাহ্ শব্দটি নেমে এসেছে। এবং তারপর আল্লাহ্
নিকটবর্তী পাহাড়ে বজ্রবিদ্যুৎ নিক্ষেপ করেন। এবং একটি আতঙ্কজনক শব্দ
উৎপাদিত হয় এবং কালো হয়ে উঠলে পাহাড়টি চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যায়। এবং
দজ্জাল অজ্ঞান হয়ে যায় এবং নিচে পড়ে যায়। এবং
তারপর আল্লাহ্ আমার আঘাত সুস্থ করে দিলেন এবং বললেন যে, “দাজ্জাল শুধুমাত্র ৪ ঘণ্টার জন্য অজ্ঞান হয়েছে এবং তারপর সে
৪ ঘণ্টা পরে জেগে উঠবে। তুমি এখান থেকে দূরে চলে যাও এবং কোথাও নিজেকে
লুকিয়ে রাখ এবং যতক্ষণ পর্যন্ত আমি আদেশ না করি, ততক্ষণ দাজ্জালের সামনে আসবে না।” আমি আল্লাহ্কে কৃতজ্ঞতা জানাই যে, তিনি আমাকে রক্ষা
করেছেন। এবং তারপর আমি সেখান থেকে পালিয়ে যাই। যখন দাজ্জাল আবার
জেগে উঠে তখন সে ভাবে যে, সে আমাকে হত্যা করে ফেলেছে। এবং দাজ্জাল মুসলমানদের কাছে
ফিরে আসে এবং তাদেরকে বলে যে, সে আমাকে হত্যা করে ফেলেছে। এবং এটা শুনে মুসলমানরা
ভীষণ দুর্বল হয়ে পরে। এবং কোনও বাধা ছাড়াই দাজ্জাল আবার তার মিশন অব্যাহত রাখল।
জাযাকাল্লাহু খাইরান।